১ম আন্তর্জাতিক শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাই কমিশনারের বক্তব্য বিবৃতি ও বক্তৃতা

১ম আন্তর্জাতিক শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাই কমিশনারের বক্তব্য

১ম আন্তর্জাতিক শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব উপলক্ষ্যে বক্তব্য:

প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রফেসর ড. রেজওয়ানা চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপার্সন, নৃত্যকলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ, সম্মানিত শিল্পীগণ ও প্রিয় বন্ধুরা,

***

১. আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ১ম আন্তর্জাতিক শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব ২০২৩-এ উপস্থিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এই অনুষ্ঠানটি কেবল শাস্ত্রীয় নৃত্যের সমৃদ্ধ ট্যাপেস্ট্রির উদ্‌যাপনই নয়, এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থায়ী সাংস্কৃতিক বন্ধনেরও প্রতিফলন। এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি আয়োজকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

***

২. ভারত ও বাংলাদেশের রয়েছে সুগভীর ও সহস্রাব্দের পুরোনো যৌথ সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়ার ইতিহাস। আমাদের উভয় জাতিই একটি সর্বজনীন ঐতিহ্য, ভাষা ও শিল্পের প্রতি ভালবাসা দিয়ে একই বন্ধনে আবদ্ধ যা ভৌগলিক সীমানাকে অতিক্রম করেছে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বন্ধুত্বকে সযত্নে লালন করে সম্প্রীতির সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে।

৩. শাস্ত্রীয় নৃত্যের বিভিন্ন রূপ ট্যাপেস্ট্রির সুতোর মতো করে মানুষের আবেগ, আধ্যাত্মিকতা ও ঐতিহ্যের গল্প বোনে। মাধুর্যমণ্ডিত গতিবিধি আর অভিব্যক্তিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে জীবনের সৌন্দর্য ও জটিলতাকে চিত্রিত করে এই নৃত্য আমাদের সভ্যতার নির্যাসকে প্রতিফলিত করে। এই উৎসবটি শুধুমাত্র শৈল্পিক উৎকর্ষকে উৎসাহিত করে না বরং কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সাংস্কৃতিক বন্ধনকে শক্তিশালী করার একটি মঞ্চ হিসেবেও কাজ করে।

৪. নৃত্যের আকর্ষণের ঊর্ধ্বে, এই উৎসবটি আমাদের সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে আরও সমৃদ্ধ করার বিশাল সম্ভাবনার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ প্রদান করে। আমি বিশ্বাস করি যে, এই ধরনের আয়োজন আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করে, বাধা ভেঙে দেয় এবং একে অপরের ঐতিহ্যের বিষয়ে গভীর উপলব্ধির ভিত্তি স্থাপন করে।

***

৫. সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ভারত ও বাংলাদেশ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করেছে। এই আদান-প্রদানের মধ্যে রয়েছে চিত্র প্রদর্শনী, সঙ্গীত উৎসব, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও সাহিত্যবিষয়ক অনুষ্ঠান, যার সবগুলোই উভয় জাতির মধ্যে মানুষে-মানুষে একটি দৃঢ় সংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সেই বন্ধনের অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে যা আমাদের একত্রে আবদ্ধ করে, এবং আমি আপনাদেরকে আশ্বাস দিচ্ছি যে, আমরা ভবিষ্যতে এই ধরণের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানাতে ও উত্সাহিত করতে থাকবো।

৬. পরিসমাপ্তিতে, আমি এই চমৎকার উৎসব আয়োজন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের প্রতি এবং আজ আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া নৃত্য পরিবেশনকারী সকল প্রতিভাবান শিল্পীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আসুন আমরা এই সাংস্কৃতিক বিনিময়কে লালন করি এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বোঝাপড়ার সেতুবন্ধনের বিনির্মাণ অব্যাহত রাখি।

৭. ১ম আন্তর্জাতিক শাস্ত্রীয় নৃত্য উত্সব ২০২৩ দুর্দান্তভাবে সাফল্যমণ্ডিত হোক এবং এটি আমাদের উভয় দেশের মধ্যে আরও তাৎপর্যপূর্ণ সহায়তা ও সহযোগিতার পথকে প্রশস্ত করুক।

ধন্যবাদ!