শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দিরে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বক্তব্য বিবৃতি ও বক্তৃতা

শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দিরে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বক্তব্য

শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দিরে রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বক্তব্য

মাননীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব বেনজীর আহমদ,

শ্রী শ্রী যশোমাধব মন্দির কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস,

বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ ও সকল ভক্তগণ,

শুভ সন্ধ্যা!

নমস্কার!

১. ধামরাইয়ের শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দিরে রথযাত্রা উৎসবে উপস্থিত থাকতে পারাটা আমার জন্য পরম সম্মান ও সৌভাগ্যের। রথপর্বের চমৎকার ও আনন্দময় এই উপলক্ষ্যে আমি আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

২. রথযাত্রা উত্সব বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ও ভগবান জগন্নাথের ভক্তগণের জন্য অপরিসীম তাৎপর্য বহন করে। রথযাত্রা হলো ভক্তি ও যৌথ আধ্যাত্মিক বন্ধনের প্রতীক যা আমাদের দুটি মহান দেশকে একত্রিত করে।

৩. প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের রয়েছে শতাব্দীজুড়ে বিস্তৃত সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও সামাজিক আদান-প্রদানে পরিপূর্ণ যৌথ ইতিহাস। আমাদের বন্ধন নিছক ভৌগলিক নৈকট্যকে অতিক্রম করে যায়। আমরা যৌথ মূল্যবোধ, সর্বজনীন আকাঙ্খা ও মৈত্রীর অটুট বন্ধনে আবদ্ধ।

৪. রথযাত্রা উৎসব আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও মজবুত করার এবং যৌথ ঐতিহ্যের মূলে থাকা বন্ধনকে আরও গভীর করার সুযোগ প্রদান করে। এটি আমাদের সমাজের মধ্যে বিদ্যমান বৈচিত্র্য উদ্‌যাপন ও সম্প্রীতি প্রচার করার একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। উৎসবটি ধর্মীয় সীমানা অতিক্রম করে আধ্যাত্মিকতার সর্বজনীন প্রকৃতি এবং আমাদের সবাইকে একত্রিত করার জন্য বিশ্বাসের শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

৫. সাম্প্রতিক বছরগুলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাক্ষী হয়েছে। মানুষে-মানুষে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করেছি। আমাদের সম্পর্কের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক দিকসমূহ দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া বৃদ্ধিতে এবং আমাদের দুই জাতির মধ্যে বন্ধুত্বের শক্তিশালী সেতু নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

৬. ঢাকার এই শ্রদ্ধেয় মন্দিরে প্রেম, মমতা ও ঐক্যের মূর্ত প্রতীক ভগবান জগন্নাথের উপস্থিতি আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রমাণ। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমাদের ভাগ্য একে অপরের সঙ্গে জড়িত, এবং আমাদের জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

৭. রথপর্ব উদ্‌যাপনে আসুন আমরা এই মূল্যবোধগুলো অনুধাবন করি - সহনশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা। আসুন আমরা এই আদর্শগুলোকে আমাদের হৃদয় ও মনে লালন করার অঙ্গীকার করি এবং সকলের জন্য একটি শান্তিময়, ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করি।

৮. উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আতিথেয়তার জন্য আমি আয়োজকবৃন্দ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ধামরাইবাসীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।

৯. ভগবান জগন্নাথের আশীর্বাদ আমাদের উপর বর্ষিত হোক। রথপর্ব আমাদেরকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসুক, আমাদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করুক এবং ভারত, বাংলাদেশ ও সমগ্র অঞ্চলের জন্য একটি উজ্জ্বল ও আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথকে আলোকিত করুক।

ধন্যবাদ।

শুভ রথযাত্রা!

জয় জগন্নাথ!

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী দীর্ঘজীবী হোক!